ভূস্বর্গ – মানে পৃথিবীর বুকেই যেন এক টুকরো স্বর্গ নেমে এসেছে। ভারতের কাশ্মীরের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য এতোটাই বেশি যে একে স্বর্গের সাথে তুলনা করা হয়েছে। তাইতো প্রতিনিয়ত পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকে পাহাড়ি এই উপত্যকা। কোথাও বরফে ঢাকা পাহাড়চূড়া, কোথাও টিউলিপের সমারোহ, কোথাও বা আপেল বাগানের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য, লেকের টলটলে পানি, জলপ্রপাত আর ছোট বড় পাহাড়ি ঝর্নাধারা আপনাকে মূহুর্তেই স্বপ্নের রাজ্যে নিয়ে যাবে। সেই সাথে আছে পাহাড়ি জনপদ ও প্রাচীন সব নিদর্শন ঘুরে দেখার সুযোগ। তাইতো ভারত ভ্রমণের পরিকল্পনা করলে প্রথমেই মাথায় চলে আসে স্বপ্নের রাজ্য কাশ্মীর এর কথা। বিদেশ ভ্রমনের জন্য মোটামুটি বাজেট ফ্রেন্ডলি প্লান করলে আপনি কাশ্মীরে একটি লাক্সারিয়াস ট্যুর এর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। কাশ্মীর কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কী কী উপভোগ করবেন তার সকল ইনফরমেশন জেনে নিয় এখান থেকে। আর আজই করে ফেলুন আপনার কাশ্মীর ভ্রমণের পূর্নাঙ্গ ট্যুর প্ল্যান। তাহলে চলুন এবার কিছু সময়ের জন্য কাশ্মীর থেকে ডুব দিয়ে আসা যাক।
পৃথিবীর ভূস্বর্গ কাশ্মীরে কীভাবে যাবেন?
এটি যেহেতু একটি আন্তর্জাতিক ভ্রমণ তাই প্রথমেই আপনাকে ভারতের ভিসা পেতে হবে। বাংলাদেশ থেকে খুব সহজেই ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায়। এজন্য আপনার কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদ আছে এমন পাসপোর্ট, ভ্রমণের পর্যাপ্ত তহবিলের প্রমাণপত্র থাকতে হবে। এরপর যে কোনো ভিসা কোম্পানির মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করে ভারত ভ্রমণের প্রথম কাজ সম্পন্ন করতে হবে। প্রয়োজনীয় ভিসা পেয়ে গেলে আপনি আকাশপথ, রেলপথ কিংবা সড়কপথের যে কোনো বাহনের টিকেট সংগ্রহ করে কাশ্মীরের উদ্যেশ্যে যাত্রা শুরু করতে পারেন৷ ঢাকা থেকে আপনার প্রধান গন্তব্য জম্মু কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর এর দূরত্ব ১৯০০ কিলোমিটার। আর ঢাকা থেকে সরাসরি শ্রীনগর যাওয়ার কোনো ওয়ে নেই।
আপনার যদি বাজেট নিয়ে কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে বাই এয়ারে একটি রিল্যাক্স ট্রিপ এর পরিকল্পনা করতে পারেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি দিল্লির ফ্লাইট এর টিকেট কাটতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে দিল্লি এয়ার টিকেট মূল্য সাধারণত ১২ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে। তবে আপনি যদি আপ-ডাউন টিকেট একসাথে সংগ্রহ করেন তাহলে খরচ কিছুটা কম পড়বে। দিল্লি পৌঁছে সেখান থেকে সরাসরি শ্রীনগর এর ফ্লাইট ধরতে পারবেন। এক্ষেত্রে দিল্লি টু শ্রীনগর এয়ার টিকেট মূল্য ৬ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ভারা নির্ভর করে ভ্রমণের সিজন ও সুযোগ সুবিধার ওপরে।
তবে আপনি দিল্লি থেকে শ্রীনগর যাওয়ার জন্য রেলপথ বেছে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে দিল্লি থেকে রেলপথে আপনি জম্মু পর্যন্ত যেতে পারবেন৷ বাকিটা পথ জীপে করে পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে শ্রীনগর পৌঁছাতে হবে। দিল্লি স্টেশন থেকে জম্মু যাওয়ার এভেইলএবেল ট্রেন পাওয়া যায়। শ্রেণিভেদে ভাড়া পড়বে ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে।
তবে আপনি যদি খরচ আরও কিছুটা কমিয়ে আনতে চান সেক্ষেত্রে পুরোটা জার্নি রেলপথে করতে পারেন৷ ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে চলে যেতে পারবেন সরাসরি কলকাতা। শুক্রবার, সোমবার এবং বুধবার সপ্তাহে এই তিনদিন মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্যেশ্যে যাত্রা করে। কমলাপুর স্টেশন বা চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে আপনি মৈত্রী এক্সপ্রেস এর টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। শ্রেণি অনুযায়ী ভাড়া ২৫০০ থেকে ৩৪০০ টাকা। এর থেকেও কম খরচে কলকাতা যেতে চাইলে সড়কপথে যেতে পারেন। ঢাকা টু কলকাতা রুটে সৌদিয়া, শ্যামলী, রয়েল কোচ, গ্রীণ লাইন সহ বিভিন্ন কোম্পানির এসি ও নন এসি বাস নিয়মিত চলাচল করে। সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী ভাড়া পড়বে ৯০০ থেকে ২০০০ টাকা।
এরপর কলকাতা থেকে জম্মু পর্যন্ত যেতে হবে রেলপথে। কলকাতার হওড়া স্টেশন থেকে হিমগিরি ও জম্মু তাওয়াই নামক এই দুটি ট্রেন জম্মু পর্যন্ত চলাচল করে। প্রতি মঙ্গলবার, শুক্রবার ও শনিবার রাত ১১ টা ৫০ মিনিটে হিমগিরি ট্রেন জম্মুর উদ্যেশ্যে যাত্রা শুরু করে। আর জম্মু তাওয়াই ট্রেন প্রতিদিনই এই রুটে চলাচল করে। কিন্তু এই ট্রেনে যাতায়াত করলে সময় তুলনামূলক অনেক বেশি লাগবে। তাই এমন প্লান করে ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করুন যাতে কলকাতা গিয়ে হিমগিরি এক্সপ্রেস ট্রেন ধরতে পারেন। শ্রেণিভেদে ট্রেনের ভাড়া পড়বে ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত।
এবার জম্মু থেকে শ্রীনগর যাওয়ার জন্য শেয়ার জীপ নিতে পারেন অথবা লোকাল বাসে যাতায়াত করতে পারেন। জম্মু থেকে শ্রীনগর পৌঁছাতে আপনার খরচ হবে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। শ্রীনগর হলো আপনার কাশ্মীর ভ্রমণের মূল পয়েন্ট, এখান থেকে আপনি কাশ্মীরের সবগুলো স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন। একটি স্পট ঘুরে আবার শ্রীনগর রিটার্ন করেই আপনাকে অন্য স্পটে যেতে হবে। এভাবে সবগুলো স্পট ঘুরে আবার শ্রীনগর থেকেই ফিরতি যাত্রা শুরু করতে হবে।
কখন যাবেন কাশ্মীর ভ্রমণে?
কাশ্মীরে সবথেকে বেশি পর্যটকের আনাগোনা ঘটে এপ্রিল থেকে মে মাসে। কাশ্মীরে তখন ভরা বসন্ত। চারদিকে টিউলিপ সহ নানা ফুলের সমারোহ। স্নিগ্ধ আকাশ ও পাহাড়চূড়ায় শুভ্র সাদা বরফের উপস্থিতি এক দারুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মেলে ধরে। মূলত বসন্তে কাশ্মীরের সৌন্দর্য কয়েক গুন বেড়ে যায়। সবুজ ঘাসের চাদোয়া বিছিয়ে থাকে যেন আপনাকে বুকে টেনে নিতে। তাই এটা যদি আপনার প্রথমবারের মতো কাশ্মীর ভ্রমণ হয় তাহলে এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যেই ট্যুর প্লান করুন।
তবে কাশ্মীরের সৌন্দর্য একেক ঋতুতে একেক রূপ ধারণ করে। তাই ভূস্বর্গের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আপনার কমপক্ষে তিনবার এখানে পাড়ি জমানোর প্রয়োজন পড়বে। যেমন পুরো তুষারে ঢাকা উপত্যকা ও স্নোফল দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাইলে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে আপনাকে কাশ্মীর ভ্রমণের যেতে হবে। তবে এই সময়টাতে তাপমাত্রা মাইনাস ডিগ্রিতে নেমে যায়। সুতরাং খুব বেশি সাহসী না হলে ও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকলে শীতকালে কাশ্মীর ভ্রমণ না করাই উত্তম। আর কাশ্মীরের সুস্বাদু সব ফলের স্বাদ নিতে চাইলে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে যেতে হবে। বিশেষ করে এই সময়টাতে আপেল বাগান গুলো টকটকে আপেলে পরিপূর্ণ থাকে। তাছাড়াও চিনাবাদাম সহ অন্যান্য পাহাড়ি ফল গুলোও আপনি তৃপ্তির সাথে গ্রহণ করতে পারবেন এই সিজনে। তাই একাধিকবার কাশ্মীর যাওয়ার সুযোগ পেলে অবশ্যই আলাদা আলাদা ঋতুতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
কাশ্মীরের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানসমূহ
পুরো কাশ্মীর জুড়েই যেন সৌন্দর্যের ছড়াছড়ি। যেদিকে চোখ যায় শুধু পাহাড়, উপত্যকা, বরফের স্তুপ ও বাগানের নজরকাড়া সৌন্দর্য। তবে কাশ্মীরের এমন কিছু উল্লেখযোগ্য স্পট রয়েছে যেখানে না গেলেই নয়। চলুন এমন কিছু পর্যটন এলাকা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
১. শ্রীনগর
কাশ্মীর ভ্রমণের ক্ষেত্রে যেহেতু প্রথমেই আপনাকে শ্রীনগর পৌঁছাতে হবে তাই এই শহরটিই সবার আগে ঘুরে দেখা উচিত। অবশ্য কাশ্মীরের সবথেকে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা বলা যায় এই শহরকে৷ এই শহরে ঘুরে দেখতে পারবেন বিখ্যাত ডাল লেক, লেকের বুকে ভাসমান হাউসবোট, ভাসমান সিনেমা হল, মোঘল গার্ডেন, ইন্দিরা গান্ধী টিউলিপ গার্ডেন, নাগিন লেক, হযরত বাল মসজিদ সহ আরও বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র। এই শহরেই রাতগুলো কাটাতে পারবেন বিলাসবহুল ধাচে পুরো আয়েশি কায়দায়।
২. পেহেলগাম
শ্রীনগর থেকে ৯৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাশ্মীরের এক অনিন্দ্য সুন্দর শহর পেহেলগাম। শুধু যে শহরটিই সুন্দর তা কিন্তু নয়। যাত্রাপথে রাস্তার দুই ধারের আপেল বাগান, জাফরান ক্ষেত, পাইন গাছের সারি আপনাকে উৎফুল্ল করবে। আরো মনোযোগ দিয়ে পরিবেশ উপভোগ করলে দেখতে পারবেন দূরের কোনো পাহাড় থেকে ঝর্ণাধারা আছড়ে পড়ছে নিচের দিকে। পেহেলগাম শহরে পৌঁছে ঘুরে দেখতে পারবেন বেতাব ভ্যালি, আরু ভ্যালি, আপেল বাগান, শেশনাগ হ্রদ, লিডার অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, মিনি সুইজারল্যান্ড সহ বরফে আচ্ছাদিত পাহাড়চূড়া। এখানকার হস্তশিল্প-ও আপনার কাছে বেশ পছন্দনীয় লাগবে।
৩. কশ্মীর ভ্যালি
কাশ্মীর ভ্রমণে যাবেন আর কাশ্মীর ভ্যালি থেকে ঘুরে আসবেন না এ আবার কখনও হয় নাকি। একদিকে পীর পাঞ্জাল রেঞ্জ অন্যদিকে হিমালয় রেঞ্জ বেষ্টিত এই ডিম্বাকৃতির উপত্যকাটি বেশিরভাগ সময়ই তুষারে আবৃত থাকে। সুবিশাল এই ভ্যালি দৈর্ঘ্যে ১৩৫ কিলোমিটার আর প্রস্থে ৩২ কিলোমিটার। শ্রীনগর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত কাশ্মীর উপত্যকা থেকে আপনি মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে ঘুরে আসতে পারবেন। উপত্যকার চারদিকে ট্রেকিং এর অভিজ্ঞতা আপনাকে বেশ আনন্দ দেবে।
৪. সোনমার্গ
শ্রীনগর থেকে ট্যাক্সি বা রিজার্ভ জীপ নিয়ে ৮২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে চলে যেতে পারেন সোনমার্গ শহরে। একই শহরে দেখতে পাবেন লেক, নদী, পাহাড়ি উপত্যকা এবং জলপ্রপাত। যাওয়ার সময় পুরোটা পথেই দেখা মিলবে সিন্ধু নদের, সেই সাথে পথিমধ্যে মাঝে মাঝেই দেখা মিলবে পাহাড়ি ছোটো ছোটো জনপদের। সোনমার্গ পৌঁছে টাট্টু ঘোড়ায় চেপে ঘুরে বেড়াতে পারবেন শহরের বিভিন্ন স্পটে। দেখা মিলবে থাজিওয়াজ হিমবাহ, কৃষ্ণসার লেক, নীলাগ্রাদ নদী, জাজিলা পাস সহ ছোট বড় নানান পাহাড়ি ঝর্নার। আহরবলের জলপ্রপাত দেখে আসতেও ভুল করবেন না যেন।
৫. গুলমার্গ
নানানরকম বিনোদনের আয়োজন নিয়ে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে গুলমার্গ শহর যা শ্রীনগর থেকে মাত্র ৫২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গুলমার্গ এর সবথেকে সেরা আকর্ষণ হলো ৮৮২৫ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত হিল স্টেশন। এখানে সারা বছর জুড়েই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। এছাড়াও ঘুরে দেখতে পারেন সেন্ট মেরী চার্চ, এলপাথর লেক, খিলানমার্গ, বাবা রেশির মাজার, মহারানি মন্দির ইত্যাদি। বিনোদনের জন্য উপভোগ করতে পারেন গন্ডো রাইড (পাখির চোখো পুরো কাশ্মীরের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য), গল্ফ কোর্স, ইগলু ক্যাফে, স্কেটিং ইত্যাদি। আপনার কাশ্মীর ভ্রমন যেন পূর্নতা পাবে গুলমার্গ গিয়ে।
৬. ইউসমার্গ
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭৮৬১ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কাশ্মীরের একটি জনপ্রিয় হিল স্টেশন ইউসমার্গ। এটি কাশ্মীরের বাডগাম জেলায় অবস্থিত, শ্রীনগর থেকে যার দূরত্ব ৪৭ কিলোমিটার। কোলাহল থেকে বেরিয়ে একদম নিরিবিলিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে চলে যেতে পারেন ইউসমার্গে। চারদিকে পাইন গাছের সমারোহ ও সবুজ উপত্যকায় চাইলে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। এই অঞ্চলের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্পট হলো নীলনাগ লেক, দুধগঙ্গা, হে জন দরগা, পাখার্পোরা মন্দির, তোসা ময়দান, চারারি শরীফ ইত্যাদি। এই স্পটে খুব কম পর্যটকের আনাগোনা ঘটে তাই এখানে আপনি একটি রিলাক্স ট্যুরের আয়োজন করতে পারবোন৷
কাশ্মীরে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা
থাকার জন্য সবথেকে লাক্সারিয়াস ও উপভোগ্য জায়গা হলো শ্রীনগরের ডাল লেকের ওপর অবস্থিত বিভিন্ন ভাসমান হাউসবোট। এখানে বিলাসবহুল বেডরুম সহ থাকছে খাওয়ার সবথেকে ভালো ব্যবস্থা। তবে এসকল লাক্সারিয়াস হাউস বোটে রাত কাটাতে চাইলে আপনার ট্যুর বাজেট অনেক বেশি রাখতে হবে। যদি একটু খরচ কমাতে চান তাহলে সাধারণ মানের আবাসিক হোটেলে উঠতে পারেন। এখানে কাপল রুমের জন্য সাধারণত ১৩০০ থেকে ২০০০ টাকা খরচ করতে হবে। চাইলে বিভিন্ন রিসোর্ট বুক করেও থাকতে পারেন৷ এক্ষেত্রেও খরচ মোটামুটি বেশি পড়বে। অনেকেই আগে থেকে হোটেল বুক করে রাখেন। তবে এক্ষেত্রে সাজেশন হলো স্পটে পৌঁছে সকল সুযোগ সুবিধা দেখে দরদাম করে রুম বুকিং করা। এতে খরচ কিছুটা কম পড়বে। তবে পিক সিজনে আগে থেকে বুক করে রাখলে ঝামেলা কম থাকে।
সাধারণত বেশিরভাগ আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টের সাথেই খাওয়ার ব্যবস্থা বা রেস্টুরেন্ট থাকে। আবার চাইলে বাইরের সাধারণ হোটেল থেকেও খেতে পারবেন৷ সাধারণ মানের খাবারের জন্য প্রতি বেলায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা খরচ হবে। কাশ্মীরের স্পেশাল মাটন বিরিয়ানি অবশ্যই চেখে দেখে আসবেন। তাছাড়া কাশ্মীরি কাবাব, মাটন রোগান জোশ, আলুর দম, কাহভা, নাদরু ইয়াখনি এই অঞ্চলের জনপ্রিয় কিছু খাবার যা একবার হলেও টেস্ট করা উচিত।
শেষকথা
আশাকরি এবার কাশ্মীর ভ্রমণের প্লান করতে আপনাকে খুব বেশি বেশ পেতে হবে না। কেননা এখানে প্রাকটিক্যাল ভাবে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই নিজের বাজেট অনুযায়ী আজই একটি চমৎকার ট্যুর প্লান করে ফেলুন। তবে কাশ্মীর গিয়ে খরচের ব্যাপারে খুবই সাবধান থাকবেন। কোননা দামাদামি না করলে সব জায়গাতেই আপনার পকেট থেকে দু’পয়সা বেশি খসবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। আপনার কাশ্মীর ভ্রমণ সুন্দর ও সুপরিকল্পিত হোক এই কামনা রইলো।
ধন্যবাদ।