+8801771 207 607 araftrip@gmail.com

Login

Sign Up

After creating an account, you'll be able to track your payment status, track the confirmation and you can also rate the tour after you finished the tour.
Username*
Password*
Confirm Password*
First Name*
Last Name*
Birth Date*
Email*
Phone*
Country*
* Creating an account means you're okay with our Terms of Service and Privacy Statement.
Please agree to all the terms and conditions before proceeding to the next step

Already a member?

Login

Login

Sign Up

After creating an account, you'll be able to track your payment status, track the confirmation and you can also rate the tour after you finished the tour.
Username*
Password*
Confirm Password*
First Name*
Last Name*
Birth Date*
Email*
Phone*
Country*
* Creating an account means you're okay with our Terms of Service and Privacy Statement.
Please agree to all the terms and conditions before proceeding to the next step

Already a member?

Login
+8801771 207 607 araftrip@gmail.com

Login

Sign Up

After creating an account, you'll be able to track your payment status, track the confirmation and you can also rate the tour after you finished the tour.
Username*
Password*
Confirm Password*
First Name*
Last Name*
Birth Date*
Email*
Phone*
Country*
* Creating an account means you're okay with our Terms of Service and Privacy Statement.
Please agree to all the terms and conditions before proceeding to the next step

Already a member?

Login

তুরস্কের ১৪ টি অন্যতম জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান যা আপনার অবশ্যই ঘুরে দেখা উচিত!

Stunning Places of Turkey Tour

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও ঐতিহাসিক নিদর্শনে ঠাসা এক অনন্য সুন্দর দেশ তুরস্ক। অবস্থানগত দিক থেকে দেশটি এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত। এখানে একই সাথে আপনি পাহাড়, জলপ্রপাত, সমুদ্র, প্রাচীন জনপদ, বিলাসবহুল প্রাসাদ, প্রাচীনতম বাজার, জাদুঘর ও আচর্য সব মসজিদ ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন৷ রাজধানী আঙ্কারা এবং সবথেকে বড় শহর ইস্তাম্বুল ভ্রমণের পরিকল্পনা তো কোনোভাবেই বাদ দেয়া উচিত হবে না। মোটকথা ভ্রমণপিয়াসী মানুষের জন্য তুরস্ক একটি আদর্শ জায়গা। তাই বিদেশ ভ্রমনের সুযোগ হলে অবশ্যই তুরস্কের দর্শনীয় স্থানগুলোতে একবার ডুব দিয়ে আসতে পারেন। আশাকরি আপনার সময় ও অর্থের অপচয় হবে না। তুরস্ক ভ্রমনের ক্ষেত্রে যে ১৪ টি দর্শনীয় স্থান আপনার ভ্রমণ তালিকায় রাখতে পারেন তা এখানে উল্লেখ করা হলো। 

১. হাজিয়া সোফিয়া গ্রান্ড মসজিদ 

তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সবথেকে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান হাজিয়া সোফিয়া মসজিদ যা স্থানীয়দের কাছে আয়া সোফিয়া নামেও পরিচিত। মূলত ষষ্ঠ শতাব্দীতে এটি একটি খ্রিষ্টান গীর্জা হিসেবে নির্মিত হলেও কালের বিবর্তনে এবং নানা উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে এটি বর্তমানে মসজিদে রূপান্তরিত হয়েছে। পরিবর্তন ঘটেছে এর গঠনগত কাঠামোতেও। মূলত বৈচিত্র্যময় ইতিহাসের কারনেই হাজিয়া সোফিয়া মসজিদ বিশ্বব্যাপী এতোটা খ্যাতি অর্জন করেছে। তবে এর গঠনগত সৌন্দর্যও কোনো অংশে কম নয়৷ সুনিপুণ নকশা খচিত দরজা, ভবন, হাম্মাম খানা ও চারিপার্স্বস্থ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এর স্থাপত্যশৈলীকে করেছে নান্দনিক। তাইতো তুরস্কে পৌছেই পর্যটকদের প্রথম ভ্রমণ প্লান হয় হাজিয়া সোফিয়া গ্রান্ড মসজিদ। 

২. তোপকাপি প্যালেস মিউজিয়াম 

অটোমান সাম্রাজ্যের জলজ্যান্ত নিদর্শন তোপকাপি প্যালেস। এটি ৪০০ বছরের পুরোনো একটি বিলাসবহুল রাজকীয় প্রসাদ। অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী, বিলাসবহুল সকল তৈজসপত্র এবং বৈচিত্র্যময় ইতিহাসের জন্য তোপকাপি প্যালেস তুরস্কের অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিনত হয়েছে৷ ইস্তাম্বুল শহর ভ্রমণের সময় এই প্রাসাদ থেকে ঘুরে আসতে ভুলবেন না। তোপকাপি প্যালেস ভ্রমনের জন্য আপনাকে প্রবেশ মূল্য হিসেবে খরচ করতে হবে ১৫০০ লিরা (তুরস্কের মূদ্রার নাম) যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৫,৪২৩ টাকা। তবে এই প্রাসাদের সবথেকে আকর্ষনীয় স্থান হলো হারেম। মূলত এই অংশেই শুলতান পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে। হারেমে প্রবেশ করার জন্য আপনাকে আরও বাড়তি ৫০০ লিরা খরচ করতে হবে। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৮০৭ টাকার সমান। ইস্তাম্বুল শহরের ৩৫০ হেক্টর জমির ওপরে নির্মিত পুরো প্রাসাদটি ঘুরে দেখতে আপনার ৩ ঘন্টারও বেশি সময় লাগবে৷ তাই হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে তোপকাপি প্যালেস ভ্রমণে যাওয়া উচিত। তবে প্রতি মঙ্গলবার এই প্রসাদে সাধারণ পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ, তাই ট্যুর প্লান করার আগে বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। 

৩. নীল মসজিদ 

ইস্তাম্বুল শহরের আরও একটি উল্লেখযোগ্য প্রাচীন নিদর্শন ও জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান নীল মসজিদ। যদিও মসজিদ টির আসল নাম সুলতান আহমেদ মসজিদ, কিন্তু এর অভ্যন্তরে নীল রঙের টাইলস ব্যবহার করে ডেকোরেশন করা হয়েছে বিধায় এটি নীল মসজিদ হিসেবেই খ্যাত। মসজিদের অভ্যন্তরের নীল আভা মুহুর্তেই আপনাকে মানসিক প্রশান্তি এনে দেবে৷ মূলত অটোমান স্থাপত্যশৈলীতে মসজিদটি নির্মান করা হয়েছিল (১৬০৯-১৬১৬)। মসজিদের অভ্যন্তরে রয়েছে সুবিশাল উঠান, একটি মাদরাসা, মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সুলতান আহমেদ বখতি এর সমাধি এবং নীল টাইলসে মোড়ানো অন্দরমহল। এই মসজিদে একসাথে দশ হাজার মুসুল্লি জামাআতে সালাত আদায় করতে পারে। প্রতিনিয়ত অসংখ্য দর্শনার্থী নীল মসজিদের মোহনীয় সৌন্দর্যে হারিয়ে যেতে ভীড় জমায় এখানে। 

৪. পামুক্কালে

তুরস্কের ডিনিজলি রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত একটি উল্লেখযোগ্য প্রকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পামুক্কালে। মূলত এটি মেন্দেরেস নদীর উপত্যকায় গড়ে ওঠা সাদা রঙের একটি ব্যতিক্রমী শহর। পুরো শহরটিতে ধবধবে সাদা রঙের সিড়ি নেমে গেছে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত। আর তার ওপরে প্রবাহিত হতে থাকে গরম পানির প্রবাহ। মূলত পাহাড়ের গা বেয়ে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ স্বচ্ছ গরম পানি নেমে আসে নিচের দিকে। আর পানিতে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম জমে জমে তৈরি হয়েছে এই চমৎকার সাদা রঙের সিড়ি। আর সিড়ির ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে ছোটো বড় অনেক জলাশয়। আছে ১৬৭ টি উষ্ণ পানির প্রবাহ যার তাপমাত্রা সাধারণত ৩৬ থেকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে। পামুক্কালে পৌছে মনে হবে এ যেন এক ধবধবে সাদা স্নিগ্ধ কোনো স্বপ্নের দেশে পৌঁছে গেছেন। খালি পায়ে হাটতে পারবেন শুভ্র সাদা সিঁড়ির ওপর দিয়ে। চাইলে গা ভিজিয়ে নিতে পারবেন জলাশয়ের জমা পানিতে। একদমই অন্যরকম একটা এডভেঞ্চার হবে পামুক্কালে ভ্রমনের মাধ্যমে। ইস্তাম্বুল থেকে ডেনিজলি পৌঁছে সরাসরি ট্যাক্সি নিয়ে চলে যেতে পারবেন পামুক্কালে। 

৫. গ্রান্ড বাজার

১৪৫৫ সালে নির্মিত তুরস্কের অন্যতম প্রাচীন এবং বৃহৎ মার্কেট গ্রান্ড বাজার। সেই প্রাচীন সময় থেকে এখনও পর্যন্ত বাজারটি তার প্রাণ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এখানে চার হাজারেরও বেশি ছোট বড় দোকান রয়েছে। ইস্তাম্বুল শহরের যে কোনো প্রান্ত থেকে আপনি খুব সহজেই গ্রান্ড বাজারে প্রবেশ করতে পারবেন। কোননা এই বাজারে একটি বা দুটি নয় বরং ৬১ টি গলি রয়েছে। আর একেক গলিতে একেক ধরনের পণ্যের বিশেষত্ব নিয়ে আলাদা আলাদা দোকানের সারি রয়েছে। এখানে আপনি ৫০০ বছরের পুরোনো গয়না থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পন্য সামগ্রী পাবেন। প্রতিটি দোকানের সাজসজ্জা আপনাকে মুগ্ধ হতে বাধ্য করবে। বিশেষ করে তুরস্কের বিখ্যাত চা, কাচের বাতি, কার্পেট, গয়না এবং সিরামিকপণ্য আপনাকে পকেট খালি করতে বাধ্য করবেই। তাই শপিং হোক বা ঘোরাঘুরি যে কোনো উদ্দেশ্যে ঘুরে আসতে পারেন তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী মার্কেট গ্রান্ড বাজার থেকে। 

৬. ক্যাপাডোসিয়া

যান্ত্রিক শহর ছাড়াও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়ে মানুষের সুনিপুণ দক্ষতায় গড়ে তোলা কোনো শহরে ঘুরে বেড়াতে চাইলে চলে যেতে পারেন ক্যাপাডোসিয়াতে৷ পাহাড়ের মতো উঁচু ঢিবির তলদেশ গুহা কেটে তৈরি করা আবাসন,  এ যেন এক স্বপ্নের শহর। বহু বছর আগে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ছাই জমে এই অঞ্চলে ছোট বড় পাহাড়ের মতো সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে এই ঢিবি গুলো নিচ থেকে খনন করে প্রস্তুত করা হয় বাসস্থান। পুরো শহর জুড়েই দেখা মিলবে ছোট ছোট আন্ডারগ্রাউন্ড সিটি ও বৃহৎ প্রাসাদের। চাইলে আপনিও এই গুহার মধ্যের কোনো একটি কক্ষে রাত কাটাতে পারবেন ও সেই সাথে তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খাবারের স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন। হট এয়ার বেলুনে চড়ে সন্ধ্যার লাল আভায় রাঙানো আকাশে ভেসে বেড়ানোর সময় ক্যাপাডোসিয়া শহরকে এক স্বপ্নের জগৎ বলে মনে হয়। তাছাড়াও ঘুরে দেখতে পারবেন জেলভে ওপেন এয়ার মিউজিয়াম। জাদুঘরটি ক্যাপাডোসিয়া শহরেই অবস্থিত। 

৭. এফিসাস মিউজিয়াম 

তুরস্কের প্রাচীন শহর ইজমিরে অবস্থিত বিশ্ব বিখ্যাত এফিসাস মিউজিয়াম। এখানে তুরস্কের প্রাচীন সভ্যতার হাজারো দুষ্প্রাপ্য নিদর্শন দেখতে পাবেন। তবে এই জাদুঘরের সবথেকে বড় আকর্ষণ প্রাচীন দেবী আর্টেমিস এর প্রাচীন মূর্তি ও মন্দির। এছাড়াও প্রাচীন সভ্যতা ও নগরীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, গহনা, প্রাচীন মুদ্রা, চিকিৎসা শাস্ত্রের নানান জিনিসপত্র ও বহু প্রাচীন মূর্তি দেখতে পারবেন এই জাদুঘরে। সবমিলিয়ে ৬৪ হাজারেরও বেশি প্রাচীন নিদর্শন বিভিন্ন গ্যালারিতে সাজানো রয়েছে এফিসাস জাদুঘরে। যারা ইতিহাস জানতে ও প্রাচীন নিদর্শন দেখতে আগ্রহী তাদের জন্য এফিসাস জাদুঘর হবে খুবই আকর্ষণীয় একটি ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। 

 ৮. ক্যালিস সমুদ্র সৈকত 

তুরস্কের মুগ্লা প্রদেশের ফেতিয়ে জেলায় প্রায় ৫ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ক্যালিস সমুদ্র সৈকত। তুরস্কের বিলাসবহুল জীবনের কিছুটা ধারা উপলব্ধি করতে পারবেন এই পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণের সময়। একদিকে সমুদ্রের স্বচ্ছ, উষ্ণ স্রোতধারা আর অন্যদিকে বিলাসবহুল সব রেস্টুরেন্ট, বার, হোটেল ও ক্যাফে। বিশেষ করে রাতের আলো ঝলমলে পরিবেশ আপনি সবথেকে বেশি মুগ্ধ হবেন৷ তবে বেশিরভাগ পর্যটক সেখানে যান বিকেলের চমৎকার বাতাসে একটু রিল্যাক্স সময় কাটাতে। আর অবশেষে চমৎকার সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করে রাতে মেতে ওঠে নাইট ক্লাবের মিউজিক পার্টিতে। চাইলে বালুকাময় সমুদ্র সৈকতে সাইকেলিং এর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন৷ আর সুইমিং ও বোটিং এর সুযোগ তো হাতছাড়া করার প্রশ্নই আসে না। সব মিলিয়ে তুরস্কের মাটিতে একটা অসাধারণ ভ্রমণ অভিজ্ঞতা হবে ক্যালিস সমুদ্র সৈকতে। 

৯. আন্টালিয়া অ্যাকুরিয়াম 

তুরস্ক ভ্রমনে গেলে বিশ্বের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বৃহৎ অ্যাকুরিয়াম ‘আন্টালিয়া অ্যাকুরিয়াম’ দেখে আসার সৌভাগ্য কোনো ভাবেই মিস করা উচিত নয়। সুবিশাল ট্যাংক এর মধ্যে কৃত্রিম ভাবে সামুদ্রিক পরিবেশ তৈরি করে সেখানে ছেড়ে দেয়া হয়েছে সার্ক, সামুদ্রিক ছোট-বড় বিভিন্ন মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রানী, আছে সামুদ্রিক উদ্ভিদ সহ নানান আকর্ষণ। সুবিশাল এই কৃত্রিম সমুদ্রের ট্যাংকে ৫০ মিলিয়ন টন এরও বেশি পানি ধারণক্ষমতা রয়েছে। ট্যাংক এর মধ্যে ১৩১ মিটার লম্বা এবং ৩ মিটার প্রশস্ত বিশিষ্ট টানেল তৈরি করা হয়েছে। এই টানেলের মধ্যে দিয়ে হাটার সময় মনে হবে আপনি সরাসরি সমুদ্রের তলদেশে প্রবেশ করেছেন। টানেলের দুইপাশে বসার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। তাই হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে গেলে বসে বসে সামুদ্রিক প্রানীর বিচরণ দেখতে পারবেন। মূল অ্যাকুরিয়াম এর বাইরেও ছোট ছোট নানা থিম ভিত্তিক অ্যাকুরিয়াম তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়াও এখানে আপনি পাবেন বাহারি আইটেমে সমৃদ্ধ গিফট শপ, কফি শপ, রেস্টুরেন্ট ও ফটোগ্রাফি পয়েন্ট। এছাড়াও বাড়তি বিনোদন হিসেবে থাকছে স্নো ওয়ার্ল্ড এবং 5D মুভি থিয়েটার। সব মিলিয়ে এটি একটি পূর্নাঙ্গ বিনোদন ব্যবস্থা যা আপনাকে মুগ্ধ করতে যথেষ্ট। 

১০. লারা সমুদ্র সৈকত 

এক দিকে সমুদ্রের গর্জন ও স্রোতধারা আর অন্যদিকে পাইন বনের নজরকাঁড়া সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে চলে যেতে হবে লারা সমুদ্র সৈকতে। লারা সমুদ্র সৈকত যা তুরস্কের আন্টালিয়া মূল শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। তবে আন্টালিয়া সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের সবথেকে বেশি আকর্ষণ করে সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্ট সমূহ। রিসোর্ট এর বিলাসবহুল পরিবেশের সাথে সমুদ্রের প্রাকৃতিক শোভা মিলে এক দারুন বিনোদন কম্বিনেশন তৈরি করেছে৷ রিসোর্ট সংলগ্ন সমুদ্রের পানিতে সারাদিন হুটোপুটি করে এবং বিভিন্ন ওয়াটার গেইম উপভোগ করে আপনি যখন ক্লান্ত হয়ে যাবেন তখন আপনার জন্য রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ আয়োজন করবে তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী সব খাবার।এরপর চলে যেতে পারেন পাইন বনের মধ্যে ঘুরতে। আপনি যদি চান রিসোর্ট ভাড়া করে বাড়তি খরচ করবেন না তাহলে সে উপায়ও আছে। পাইন বনে তাবু খাঁটিয়ে ক্যাম্পিং করে বেশ আনন্দের সাথে একটা রাত কাটিয়ে দিতে পারবেন৷ লারা বিচের রাতের সৌন্দর্য খুবই উপভোগ্য যা আপনি ক্যাম্পিং এর সময় সবথেকে ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন৷ 

১১. গালাতা টাওয়ার

৬৭৬ বছরের পুরোনো গালাতা টাওয়ার যা পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ভবন হিসেবে সুপরিচিত। আপনি যদি পাখির চোখে পুরো ইস্তাম্বুল শহরকে পর্যবেক্ষণ করতে চান তাহলে চলে যেতে হবে গালাতা টাওয়ার এর পর্যবেক্ষন ডেস্কে। যদিও এই ভবনটি নির্মান করা হয়েছিল একটি ওয়াচ টাওয়ার ও ফায়ার টাওয়ার হিসেবে, কিন্তু বর্তমান এটি একটি জাদুঘর হিসেবে সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ২০৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এই ভবনের একদম টপ পয়েন্ট যাওয়ার জন্য দুইটি লিফট এর ব্যবস্থা রয়েছে। তবে নির্মানের সময় যে সিড়ি তৈরি করা হয়েছিল তা ব্যবহার করেও আপনি পুরো ভবনটি এক্সপ্লোর করতে পারবেন। গালাতা টাওয়ার এর মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী হল। এই হলগুলো ঘুরে দেখার সময় আপনি ইস্তাম্বুল সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন। তাছাড়া প্রাচীন তুরস্কের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক জলন্ত চিত্র দেখতে পাবেন এই জাদুঘরে। গালাতা টাওয়ার জাদুঘরকে মূলত ইস্তাম্বুল এর প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কেননা ইস্তাম্বুল এর অন্যতম একটি প্রাচীন নিদর্শন ও অমূল্য সম্পদ এই গালাতা টাওয়ার। ইস্তাম্বুল ভ্রমনের সময় এই প্রাচীন ওয়াচ টাওয়ারকে অবশ্যই আপনার ভ্রমণ তালিকার শীর্ষে রাখা উচিত। 

১২. ইজিপশিয়ান বাজার

তুরস্কের বিখ্যাত ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত ৩৬৪ বছরের পুরোনো ইজিপশিয়ান বাজার। তবে এটি স্পাইস বাজার বা মসলা বাজার হিসেবেও খ্যাত। মূলত মিশর বা ইজিপ্ট থেকে আমদানীকৃত মসলা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিক্রির মাধ্যমে এই বাজারে সূচনা হয় বিধায় এটি ইজিপশিয়ান বাজার নামে পরিচিতি পেয়েছে। ইস্তামুল শহরে বেড়ানোর সময় একটা বিকেল কাটিয়ে আসতে পারেন প্রাচীন এই মসলার বাজার থেকে। রং বেরঙের চেনা অচেনা বাহারি সব মসলা, ড্রাই ফ্রুটস, মধু, বাদাম সহ হাজারো পণ্যের সমারোহ আপনাকে মুহূর্তেই বিমোহিত করবে। শুধু কি মসলা? আরও আছে সিরামিকস পণ্য ও গহনার দোকান। পাবেন বিখ্যাত টার্কিশ চায়ের দোকান। ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে কিছুটা সময় জিড়িয়ে নিতে পারবেন এবং ক্লান্তি দূর করতে পারবেন চায়ের চুমুকের সাথে। বেশিরভাগ পর্যটক এখান থেকে তাদের পছন্দমতো মসলা ও ড্রাই ফ্রুটস সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। 

১৩. সুলেমানিয়ে মসজিদ 

তুরস্কের প্রাচীন ও উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো সুলেমানিয়ে মসজিদ। অটোমান সাম্রাজ্যের স্থাপনাগুলোর মধ্যে এটি একটি প্রাচীন ও চমৎকার স্থাপত্যশিল্প। ইস্তাম্বুল শহরের একটি চমৎকার ভিউ পাওয়া যায় প্রাচীন এই মসজিদ থেকে। মসজিদের সুবৃহৎ মূল ভবনের বাইরে রয়েছে বিশাল উঠান ও উঠানের মধ্যবর্তী স্থানে দেখতে পাবেন চমৎকার কৃত্রিম ঝর্ণাধারা। আরও আছে হাম্মামখানা, মাদরাসা, মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সুলেমান ও তার স্ত্রীর সমাধি, পাবলিক রান্নাঘর, চিকিৎসাকেন্দ্র। সেই সময়কার জনপ্রিয় আর্কিটেক্ট মিমার সিনানের হাত ধরের ১৫৫০ সালে মসজিদ টির নির্মান কাজ শুরু হয় এবং তা শেষ হয় ১৫৫৭ সালের পরে। অসাধারণ ক্যালিগ্রাফি, মেটালিক নকশা ও হাতির দাতের অলংকরণে মসজিদের অন্দরমহল ও বাহ্যিক দেয়াল সুসজ্জিত করা রয়েছে। মূলত মসজিদের নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী ও চমৎকার ডেকোরেশন পর্যটকদের আকর্ষণের মূল কারণ। তাইতো ইস্তাম্বুল শহরে অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিনত হয়েছে সুলেমানিয়ে মসজিদ। 

১৪. মিনিয়াতুর্ক পার্ক

তুরস্কের সকল পর্যটন কেন্দ্র এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা গুলো বুঝি যেচে এসে সব ইস্তাম্বুলে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। তাইতো তুরস্ক ভ্রমণের কথা আসলেই আগে মাথায় আসে ইস্তাম্বুল শহরের কথা। কেমন হয় যদি ইস্তাম্বুল শহরের সবগুলো উল্লেখযোগ্য স্থাপনা একসাথে একই জায়গায় বসে দেখা যায়? এই পরিকল্পনা নিয়েই ২০০৩ সাল থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে মিনিয়াতুর্ক পার্ক। এটি তুরস্ক সহ পুরো পৃথিবীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি মিনিয়েচার পার্ক৷ ইস্তাম্বুল শহরের উল্লেখযোগ্য সবগুলো প্রাচীন স্থাপনার মডেল তৈরি করা হয়েছে এই পার্কে৷ এতোটাই বাস্তবভিত্তিক ভাবে মডেল গুলো ডিজাইন করা হয়েছে যে মনে হবে আপনি সরাসরি আসল স্থাপনা গুলো দেখছেন। তাইতো এই পার্ক টিকে ইস্তাম্বুল এর শোকেস বলে অভিহিত করা হয়। তবে শুধু ইস্তাম্বুল শহরই নয় বরং তুরস্ক সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের উল্লেখযোগ্য স্থাপনার মডেলও রয়েছে এই পার্কে। ৬০ হাজার বর্গমিটার জায়গার ওপর স্থাপিত এই পার্কে মোট ১৩৫ টি মডেল স্থাপনা রয়েছে। আরও আছে রেস্তোরাঁ, ক্যাফেটেরিয়া, কিডস জোন, মিনি স্টেডিয়াম, দাবা হল, গিফট শপ, রিমোট কন্ট্রোল বোট, ট্রেন, হেলিকপ্টার সহ বিনোদনের নানান আয়োজন। এই পার্কে প্রবেশ করা জন্য আপনাকে ৫০০ লিরা খরচ করে টিকেট কাটতে হবে। তবে পার্কে প্রবেশ করার পরে এই প্রবেশ মূল্য বাবদ খরচ আপনার সার্থক মনে হবে৷ 

শেষকথা

আশা করি আর্টিকেলটি আপার তুরস্ক ভ্রমনকে কিছুটা হলেও সহজ করবে। এবার আপনি আপনার পছন্দ মতো ট্যুর প্লন সাজিয়ে নিতে পারেন। আপনার বাজেট ও সময় অনুযায়ী আপনি এক বা একাধিক পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখতে পারবেন। তবে বিশেষ করে ইস্তাম্বুল শহর ও রাজধানী আঙ্কারা পরিদর্শন করে না গেলে আপনার তুরস্ক ভ্রমন একদমই পরিপূর্ণতা পাবে না। একটি সুন্দর ও পরিকল্পিত ভ্রমণের জন্য শুভকামনা রইলো। ধন্যবাদ। 

Leave a Reply

Proceed Booking